খুনি খারাবি বৃদ্ধি পেয়েছে কক্সবাজারে
কক্সবাজার জেলাজুড়ে আবারো ভয়ংকর হত্যা, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। দিনে কিংবা রাতে এলাকা ভিত্তিক লোকাল ছিনতাকারী ও সন্ত্রাসী অপরাধীরা দাপটের সাথে নানা অপরাধ করেই যাচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকদিনের মধ্যেই শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও ৬ থেকে ৭ জন ছুরিকাঘাত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে। এখন জেলার সবখানেই আইন-শৃঙখলা চরমভাবে অবনতি হচ্ছে।

এদিকে ৭এপ্রিল বিকালে প্রতিপক্ষের হামলায় পিএমখালী চেরাংঘর বাজার এলাকায় মোর্শেদ আহমদ (প্রকাশ মোর্শেদ বলি) কে দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় মোর্শেদকে সদর হাসপাতালে আনা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মোর্শেদ পিএমখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মাইজপাড়া গ্রামের হাজী ওমর আলী পুত্র। স্থানীয়রা জানান, রাবার ড্যাম সেচ স্কীমের বিষয়ে নিয়ে নিহত মোর্শেদ এবং একই এলাকার মাহমুদুল হক গংয়ের সাথে বিরোধ চলে আসছিল।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সামান্য কথা কাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মইক্যাঘোনা পাহাড়ি এলাকায় কিল-ঘুষির আঘাতে মোহাম্মদ ইউনুছ (৪০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত মোহাম্মদ ইউনুছ ওই এলাকার মোহাম্মদের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে হারবাং ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডের মইক্যঘোনা পাহাড়ি এলাকার ইউছুপের দোকানের সামনে মোহাম্মদ ইউনুছ, একই এলাকার নুরনব্বী ও জকিরসহ আরও কয়েকজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের কিল-ঘুষিতে মোহাম্মদ ইউনুছ ঘটনাস্থলে মারা যায়।
সদর উপজেলার পিএমখালীতে ফুটবল খেলার প্রাইজমানির টাকা ভাগভাটোয়ারা নিয়ে ছুরিকাঘাতে মো. জাহাঙ্গির (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত জাহাঙ্গীর পিএমখালী ৪ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম জুমছড়ি এলাকার ছৈয়দুল হকের ছেলে। ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয় পরে ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহতের চাচা এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান,সপ্তাহ খানেক আগে মিঠাছড়িতে একটি ফুটবল খেলায় আমার ভাইপো সহ তার দল রানারআপ হয়। সেখানে ৮ হাজার টাকার মত প্রাইজমাটি পাই। সেই টাকা সবাইকে ভাগভাটোয়ারা করে দিয়ে আরো ৫০০ টাকা ঘাটতি ছিল। কিন্তু সেই টাকা নিয়ে কথাকাটির জের ধরে ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় জাহাঙ্গিরের দোকানের সামনে প্রকাশ্য পশ্চিম জোমছড়ি এলাকার ছৈয়দ করিমের ছেলে আলমগীর এবং আলাউদ্দিন ভাইপো জাহাঙ্গিরকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় তারা উপর্যোপরি ১০ টি ছুরিকাঘাত করে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তারা চমেকে রেফার করে। সে অনুযায়ী চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ৫ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
সোমবার (২৮মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের সিটি কলেজ গেইটের প্রধান সড়কে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীরা ছুরিকাঘাত করে কলেজছাত্র রিদুয়ান হত্যা করা হয়েছে। নিহত রিদুয়ান চট্টগ্রাম মহসীন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে। শহরের ৬নং ওয়ার্ডের সাহিত্যিকা পল্লী এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে। এছাড়াও শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থান নানা অপরাধ বেড়েই চলছে।
এদিকে জেল কাটা আসামীরা জামিনে বের হয়ে আবারো নানা অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এতে অনেক রাস্তা রাতের বেলায় খুবই বিপদজনক। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কোন তৎপরতাই তেমন নেই বলে দাবি সচেতন মহলের। বিশেষ করে সিএনজি ও টমটম চালকের সাথে আতাত করে ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীরা এসব অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মূলত শহরের বেশির ভাগ অপরাধীরাই বৃহত্তর দক্ষিণ রুমালিয়রছড়াস্থ সাহিত্যিকা পল্লী, পল্যাইন্না কাটা, কাটা পাহাড়, এবিছিঘোনা, টেকনাফ্যা পাহাড়, সমিতি বাজার, বাসটার্মিনাল, কলাতলীর, এলাকায় বিচরণ করে থাকে। ওই সব এলাকা রাতে-দিনে তাদের দখলে। কিন্তু কক্সবাজারের পুলিশ প্রশাসন ঘটনার এক ঘন্টা/আদা ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যায়। কিন্তু তারাও যদি জিমিয়ে থাকে অপরাধীদের অপরাধ কর্মকান্ড দিনের পর দিন বাড়তেই থাকবে। অনেকেই আবার ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এছাড়াও সেসব এলাকায় ইয়াবা ব্যসায়ীরা রয়েছে তারাও বেপরোয়া ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্বে অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা আড়ালে থাকলেও বর্তমানে তারাও মাদক ব্যবসা নিয়ে সক্রিয় রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বিশেষ করে রাতে লোডশেডিংয়ের সময় ওই সব রাস্তা ও গলিতে পর্যটক ও পথচারীদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অপরাধীরাই বিবরণ করে থাকে বিজিবি ক্যাম্প এলাকার অলিগলিতে, সাহিত্যিকা পল্লী এলাকায়, বৃহত্তরদক্ষিণ রুমালিয়ারছরা বিভিন্ন উপসড়কে, পাহাড়তলী এলাকার, ঘোনাপাড়ায়, হাসপাতাল রোড, কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, বিজিবি ক্যাম্পের নারিকেল বাগান, প্রধান সড়কের সাবমেরিন ক্যাবল এলাকা, সিটি কলেজের সামনে, হাশেমিয়া মাদ্রাসা পয়েন্ট, কলাতলীর প্রধান সড়কের টিএনটি অফিসের সামনে, আদর্শ গ্রামের সামনেসহ শহরের ডায়াবেটিক পয়েন্ট, কস্তুরাঘাট এলাকা, থানার পিছন রোড, ফায়ার সার্ভিস মসজিদ রোড, গোলদিঘীর পাড়, সদর হাসপা